খাওয়ার সময় শিশুদের প্রতি দৃষ্টি রাখা

হযরত হুনয়জা (রাঃ) বলেন, একবার খাওয়ার সময় আমরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে উপস্হিত ছিলাম। এমন সময় এক কিশোরী দৌড়ে এসে দরবারে উপস্হিত হলো। মনে হচ্ছিল, শিশুটি ক্ষুদায় অস্হির। তখনও কেউ খাওয়া শুরু করেনি।  কেননা,  নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখনো খাওয়া শুরু করেননি। মেয়েটি এসেই খাবারের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল, আর অমনি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতটি ধরে ফেললেন ও তাকে খাবার গুহণ করা থেকে বিরত রাখলেন।

অতঃপর  কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের এক লোক এসে উপস্হিত হলো। মনে হচ্ছিল, এই লোকটিও  চরম ক্ষুধার্ত। খাবারের দিকে সেও হাত বাড়াচ্ছিল। কিন্তু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকেও খাবার গ্রহণে করা থেকে বিরত করলেন।

এরপর তিনি সাহাবীদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, “ খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ না বললে শয়তান নিজের জন্য তা হালাল করে নিতে চেষ্ঠা করে। ঐ মেয়েটির মাধ্যমে প্রথমে শয়তান  এ চেষ্ঠা করেছিল; কিন্তু আমি তা প্রতিহত করেছি। অতঃপর সে ঐ গ্রাম্য ব্যক্তিটির মাধ্যমে চেষ্ঠা চালায়, সেটাও আমি প্রতিহত করেছি। আল্লাহর কসম, এই মেয়েটির হাতের সাথে এই মুহূর্তে শয়তানের হাতটিও আমার মুঠে ধৃত রয়েছে।” (মুসলিম)

এই হাদীস শরীফে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এদিকে ইঙ্গিত করেছেন যে, বড়দের কর্তব্য হলো, যদি ছোটরা তার সম্মুখে আল্লাহর নাম না নিয়ে খানা শুরু করে দেয়, তাহলে প্রথমে সতর্ক করে দেবে; অতঃপর প্রয়োজন হলে হাত ধরে ফেলবে এবং বলবে, আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলো, তারপর খাও।

আমরাও তো আজ আমাদের পরিবার-পরিজনসহ খানা খেতে বসি; কিন্তু আমাদের ছেলে-মেয়েরা ইসলামী আদব পালন করছে কি-না, সেদিকে কেউই  খেয়াল করছি না। এ কারণেই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই হাদীসটিতে বড়দের (হাতে-কলমে) শিক্ষা দিলেন, যাতে তারা ছোটদের প্রতি নজর রাখে। তাদের যেন কদমে কদমে ধরে ধরে ইসলামী আদব শেখাতে থাকে; নতুবা বরকত থেকে সকলেই বঞ্চিত হয়ে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published.