জন্মনিয়ন্ত্রণ যে সকল অবস্থায় জায়েজ-২

পূর্ববর্তী অংশ
জন্মনিয়ন্ত্রণ যে সকল অবস্থায় জায়েজ-১
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এই সুনিপূন ব্যবস্হাপনা শুধু কি মানব জাতির জন্য প্রযোজ্য (?) না বরং গহীন জঙ্গলে বিচরণকারী প্রত্যেকটি প্রানীর ক্ষেত্রেও স্রষ্টার একই বিধান চালু রেখেছেন। যখন যে প্রাণীর প্রয়োজন চাহিদা অনুসারে সেই প্রাণীর সৃষ্টি উৎপাদন তিনি বাড়িয়ে দিয়ে থাকেন। আবার যখন এর চাহিদা কমে যায় তখন এর উৎপাদন অলৌকিকভাবে হ্রাস করে দেন
গত শতাব্দীতে পেট্রোলের কোন অস্তিত্য পৃথিবীতে ছিলনা এর উৎপাদন ও ছিল না। আজকের এই প্রগতিশীল দুনিয়ায় প্রেট্রোল এক অপরিহার্য অংশ। তাই ভুমিও এর খনিজ সমূহকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এমনিভাবে ভূমির আবাদীর কথা বলতে গেলে দেখা যায় যে এক সময় পৃথিবীর ৪ ভাগের একভাগ মাত্র বসবাসের ও ফসলাদীর জন্য ব্যবহৃত হত আর বাকি অংশ পাহাড় পর্বত বন অরণ্য মরুভূমি ইত্যাদীতে হাজার হাজার মাইল অনাবাদী হিসেবে পড়ে ছিল। কিন্তু যখন জনসংখ্যা বাড়তে লাগল সেই সাথে এর প্রয়োজন অনুপাতে সেই অনাবাদী জমি গুলি আবাদ হতে লাগল আর এখনো পৃথিবীর এমন অনেক স্হান রয়েছে যেখানে প্রচুর লোক আবাদ হতে পারে।
মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অপার শক্তিতেই বান্দার সামনে এই খাবার জাহির করেন। প্রতিটি খাদ্য কণা যা মানুষের কন্ঠ হয়ে উদরে যাচ্ছে- এ একমাত্র তাঁর অনুগ্রহ। আল্লাহ তায়ালার সীমাহীন শক্তির বিশাল পথ পাড়ি দিয়ে এই খাবার অস্তিÍত্ব লাভ করেছে। এই খাবার তৈরি করতে গিয়ে সূর্য তার নিজেকে জ্বালিয়েছে। চাঁদ তাতে শীতলতা ঢেলে দিয়েছে। শিশির এই খাদ্যের উপর নিজেকে উৎসর্গ করেছে। মাটি তার বুক বিদীর্ণ হওয়ার কষ্টকে বুক পেতে নিয়েছে। মেঘ সমুদ্র থেকে পানি তুলে এনে পৌঁছে দিয়েছে। বাতাস সেই মেঘকে বৃষ্টি করে খাদ্যর কণায় কণায় ছড়িয়ে দিয়েছে। অতঃপর মহান আল্লাহর অসীম কুদরতে সৃষ্ট এই খাদ্য কণিকার কোনটি মিষ্টি, কোনটি নোনা আবার কোনটি টক। এগুলোর রং বিচিত্র, তার স্বাদ। সব মিলিয়ে কুদরতের এক বিস্ময়কর বাগিচা। অতঃমানুষের উদর জগত এবং তার হজম ব্যবস্হা সেও এক শিক্ষণীয় বিষয়। মহান মালিক ও দয়াময় প্রতিপালক এভাবেই সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত সর্বকালে, সর্বত্র প্রত্যেকের জন্য রেখেছেন এই অগাদ ব্যবস্হাপনা।

পরে যার বাস্তবমুখি কিছু প্রামান্য তথ্য আমার সামনে তুলে ধরতে প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও কুদরতি লিলাখেলায় দুর্ঘটনা সমূহের এমন সব অলৌকিক ব্যবস্হাপনা করে রেখেছেন যা চিন্তা করে কুল কিনারা পাওয়া যায়না। যে দ্রুত গতিতে পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ছে সেই গাণিতিক হারে বিভিন্ন দুর্ঘটনাও ঘটে চলেছে অনবরত। পৃথিবীর শুরু হতে অদ্যাবদি সকাল দুর্ঘটনা ও যুদ্ধে যত মানুষ নিয়ত হয়েছে তা ১৯১৪ ইং সনের বিশ্ব যুদ্ধে তার চেয়ে বেশী লোক নিহত হয়েছে এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, (সুনামী,সিডর) মহামারি, বাস, ট্রেন, বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ ইত্যাদিতে কত লোক অহরহ নিহত হচ্ছে তার হিসাব কে রাখে আর এত কঠোর নিরাপত্তা ও সাবধানতা সত্যেও পৃথিবীর কোন শক্তি এগুলি প্রতিহত করতে পারছে কি?
মোট কথা হলো এগুলো সবই সেই মহা ক্ষমতাধর বিশ্বপতির কার্যক্রম যাতে কারো কোন হাত নেই। তিনি সৃষ্টি করছেন আবার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণও সেই অনুপাতে করে যাচ্ছেন। সৃষ্টি করার পর সে কোথায় থাকবে? কি খাবে? এসকল দ্বায়িত্বও তিনি নিজেই যথার্ত ভাবে পালন করে যাচ্ছেন। এতে কোন ব্যাক্তি,রাষ্ট্র,বা সংগঠন বা জনগণের কোন সহযোগীতার প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করেন না। মানুষের আবিষ্কৃত যন্ত্র সমূহের কাজ শুধু এই যে এটি সীমিত পরিসরেও জমিনের উৎপাদন বৃদ্ধিও ক্ষেত্রে সহযোগীতার চেষ্টা করা উৎপাদিত ফল-ফসল ইত্যাদী নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে যন্ত্রের সাহায্যে (ফ্রিজ-হিমাগার ইত্যাদি সাহায্য) হেফাজত করা। অর্জিত সম্পদেও ইনসাফ ভিত্তিক সুবন্টন নির্ধারণ করা। আবাদী জমীর ইনসাফ ভিত্তিক সুবন্টন করা। আবাদী জমিনগুলো খোদাপ্রদত্ব জ্ঞান-বিজ্ঞানের সহযোগীতায় আবাদ করার চেষ্টা করা। যদিমানুষে র যান্ত্রিক ব্যবস্হাপনায় স্বীয় দায়িত্ব সমূহ যথার্তভাবে পারন করতে তৎপর থাকে তাহলে একথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে পৃথিবীর মানুষ কোন কালেই জীবনোপরনের সংকটে পড়বে না। কিন্তু নির্মম বাস্তবতা হলো এই যে, মানুষ তার স্বীয় করণীয় কাজ বাদ দিয়ে মহান শ্রষ্টার কর্ম পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করার চিন্তা ভাবনায় ব্যস্তÍ। মানুষের এহেন কর্মকান্ড বিবেকের বিবেকের বিচার যেমন চরম ভুল, অভিজ্ঞতার আলোকেও এর অসারতা সর্বজন বিদিত। যে স্রষ্ঠার বিপরীত গিয়ে মানুষের যত চেষ্টার বিপরীত গিয়ে মানুষের যত চেষ্টা মানুষকে শাক্তি, নিরাপত্তা সুস্হতা, স্হিরতা করেছে তা সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে।
মোট কথা, জন্ম নিয়ন্ত্রণকে দেশ ও জাতির মধ্যে ব্যপকভাবে প্রসার ঘটানো এবং এটাকে উন্নতি, প্রগতির সোপন হিসাবে দেখা সেটা শ্রদ্ধার অপার ক্ষমতাময় কর্মসূচীতে হস্হক্ষেপ করার শামিল  ও রাসূলের সুন্নতের পরিপন্থি। যা কোন মুসলমান করার পল্পনাই করতে পারেণা। সেটা আবার সফলতা ও উন্নতির সোপান কি করে হয়?
এই জঘন্য কাজ থেকে আল্লাহ তার অপার করুনায় মুসলমানদেরকে হেফাজত করুন ।

আমিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published.