ভালো-মন্দের চার সাক্ষী-২

পূর্বের অংশ:
ভালো-মন্দের চার সাক্ষী-১

তৃতীয় সাক্ষী : অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ

তৃতীয় সাক্ষী হল আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। আমার হাত, যা দ্বারা আমি ধরি। আমার এই পা, যা দ্বারা আমি চলি। আমার চোখ, যা দ্বারা আমি দেখি। কান, যা দ্বার আমি শুনি। এমনিভাবে আমার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা আল্লাহ আমাকে দান করেছেন। যা আমার উপর আল্লাহ্ প্রদত্ত অসংখ্য নিআমতের অন্যতম। এসকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার কাছে আল্লাহর আমানত। আমাকে এই আমানতের হেফাযত করতে হবে এবং এর খেয়ানতের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

আল্লাহ তো দুনিয়াতে বান্দাকে সুযোগ দিয়েছেন। দিয়েছেন নিজ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইচ্ছামতো পরিচালনার স্বাধীনতা ও শক্তি। সাথে সাথে বান্দাকে সতর্কও করেছেন,
(তরজমা) ‘আমি ইচ্ছা করলে অবশ্যই তাদের চক্ষুগুলো লোপ করে দিতাম, তখন তারা পথ চলতে চাইলে কীভাবে দেখতে পেত? এবং আমি ইচ্ছা করলে অবশ্যই স্ব স্ব স্থানে তাদের আকৃতি পরিবর্তন করে দিতাম, ফলে তারা (সামনেও) চলতে পারত না এবং (পিছেও) ফিরে আসতে পারত না।’
-সূরা ইয়াসীন ৩৬ : ৬৬-৬৭

কত মানুষের হাত আছে তো পা নেই। আবার কারো পা আছে তো হাত নেই। কারো আবার সব আছে কিন্তু চোখ নেই। আবার কারো হাত পা সবই আছে কিন্তু প্যারালাইসিস হয়ে সবই বিকল; সব থেকেও যেন কিছুই নেই। আমাকে আল্লাহ সব দিয়েছেন। তোমার শোকর হে আল্লাহ!

আমাকে এই নিআমতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে, এই আমানতের হেফাযত করতে হবে। আল্লাহর দেয়া নিআমতকে তাঁর হুকুম অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। তাতেই হবে নিআমতের শুকরিয়া, আমানতের হেফাযত।

আমার এ চোখ দিয়ে আমি এমন কিছু দেখব না, যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে। হাত দিয়ে এমন কিছু ধরব না, যা ধরতে তিনি নিষেধ করেছেন। এমন পথে পা বাড়াবো না, যে পথ শয়তানের। আমার যবান দিয়ে এমন কথা বলব না, যা আমাকে জাহান্নামে নিয়ে ফেলে। মোটকথা, আমার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে ভাল কাজ করব, খারাপ থেকে বিরত থাকব। কারণ আমার এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাল সাক্ষী হবে। ভাল কাজ করলে আমার পক্ষে সাক্ষী দিবে। মন্দ কাজ করলে আমারই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার বিপক্ষে সাক্ষী দিবে।

সে এক কঠিন পরিস্থিতি! বান্দা আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান। হিসাবের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো। একমাত্র চেষ্টা, কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এ কঠিন পরিস্থিতি থেকে। বান্দা চেষ্টা করবে পাপ অস্বীকার করতে। এমনই সময় আল্লাহ অনুমতি দিবেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সাক্ষী দেয়ার। আল্লাহ সেগুলোকে কথা বলার শক্তি দিবেন। সেগুলো কথা বলবে। আমাদেরই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমাদের সব গোপন বিষয় বলে দিবে। সব সত্য সত্য বলে দিবে। আমরা অস্বীকার করতে পারব না। আল্লাহ আমাদের যবানে মোহর মেরে দিবেন। আমরা কিছু বলতে পারব না, অস্বীকারও করতে পারব না; কথা বলবে শুধু আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-

الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দিব। ফলে তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের।
-সূরা ইয়াসীন ৩৬: ৬৫

শুধু কি তাই! আমার শরীরের চামড়াও সাক্ষী দিবে আমার বিরুদ্ধে, যদি আমি তা আল্লাহর নাফরমানিতে ব্যবহার করি। যে চামড়া আমার চেহারাকে সুন্দর করেছে তা যদি আমি আল্লাহর নাফরমানিতে ব্যাবহার করি, হারাম ক্ষেত্রে রূপের প্রদর্শন করি, তাহলে তা আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে। সে বলবে, দুনিয়াতে তুমি আমাকে আমার রবের নাফরমানিতে ব্যবহার করেছ। সেদিন আমি কিছু বলতে পারিনি। আজ আমার রব আমাকে বলার শক্তি দিয়েছেন। আমি আজ সব বলে দিব।

حَتَّى إِذَا مَا جَاءُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَارُهُمْ وَجُلُودُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
(তরজমা) অবশেষে যখন তারা জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে, তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের চামড়া তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে
-সূরা হা-মীম আসসাজদাহ্ ৪১: ২০

তখন মানুষ নিজের শরীরের চামড়াকে বলবে,

وَقَالُوا لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدْتُمْ عَلَيْنَا
‘তারা তাদের চামড়াকে বলবে, তোমরা আমাদের বিরম্নদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন?’

সেগুলো উত্তর দিবে-

أَنْطَقَنَا اللَّهُ الَّذِي أَنْطَقَ كُلَّ شَيْءٍ
‘আল্লাহ আমাদেরকে বাকশক্তি দান করেছেন, যিনি বাকশক্তি দান করেছেন প্রতিটি জিনিসকে।’
-সূরা হা-মীম আসসাজদাহ্ ৪১: ২১

হাঁ, এখনই আমাকে ভাবতে হবে; আমার অবস্থা কেমন হবে। আল্লাহর দেয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কি আমি আল্লাহর আনুগত্যে ব্যবহার করছি না তাঁর নাফরমানিতে। তা কি কিয়ামতের ঐ কঠিন মুহূর্তে আল্লাহর সামনে, সকল সৃষ্টিজীবের সামনে আমার পক্ষে সাক্ষী দিবে না বিপক্ষে!

চতুর্থ সাক্ষী : আল্লাহ

চতুর্থ সাক্ষী আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ্ই হলেন সবচেয়ে বড় সাক্ষী, প্রথম ও শেষ সাক্ষী, যদিও এখানে চতুর্থ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি হলেন সর্বদ্রষ্টা, সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী, যিনি অন্তরের কথাও জানেন। যাঁর থেকে গোপন থাকে না আসমান যমীনের কোনোকিছু। যিনি ‘‘আলিমুল গাইবি ওয়াশ শাহাদাহ্’’; যাঁর কাছে দৃশ্য অদৃশ্য সবই সমান।

ইরশাদ হচ্ছে-

أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ
‘এটা কি তোমার রবের সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে, তিনি সর্ববিষয়ে অবহিত?’
-সূরা হা-মীম আসসাজদাহ ৪১: ৫৩

তিনি আমাকে দেখছেন, আমি যে অবস্থায়ই থাকি, যেখানেই থাকি। তাঁর কাছে আসমান যমীনের কোনো কিছুই গোপন নয়।

إِنَّ اللَّهَ لَا يَخْفَى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ
‘নিশ্চিত জেনে রাখ, আল্লাহর কাছে আসমান যমীনের কোনো কিছুই গোপন থাকে না।’
-সূরা আলে ইমরান ৩: ৫

আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ও ত্রুটি হল, আল্লাহ মুরাকাবার বিষয়ে উদাসীনতা; ‘আল্লাহ আমাকে দেখছেন’ এই অনুভূতি দুর্বল হওয়া। ‘আল্লাহ আমাকে দেখছেন’ এই অনুভূতি সদা জাগরুক রাখা চাই। এই অনুভূতি যত প্রবল হবে গুনাহ থেকে বাঁচা তত সহজ হবে। বান্দা যতই গোপন অবস্থায় থাকুক, মানুষের দৃষ্টি থেকে যতই আড়ালে থাকুক, তার যদি এই অনুভূতি থাকে যে, ‘আল্লাহ আমাকে দেখছেন’ তাহলে গুনাহ থেকে বাঁচা তার জন্য সহজ হয়ে যায়। কিন্তু বান্দা এ বিষয়েই থাকে উদাসীন। ফলে ডুবে থাকে পাপের সাগরে। আল্লাহ বান্দাকে সতর্ক করে বলছেন-

أَلَمْ يَعْلَمْ بِأَنَّ اللَّهَ يَرَى

সে কি জানে না যে, আল্লাহ তাকে দেখছেন’
-সূরা আলাক ৯৬: ১৪

আমাদের কেউ যদি বুঝে যে, অমুক আমার গুনাহের কথা জেনে গেছে বা আমাকে গুনাহের কাজে দেখে ফেলেছে, তাহলে তার লজ্জার আর শেষ থাকে না। লজ্জা করা উচিত তো আল্লাহকে! সুতরাং হে বান্দা! আল্লাহর বিষয়ে সবচেয়ে উদাসীন থেকো না। স্মরণ কর, আল্লাহ এই গুণবাচক নামগুলো।
তিনি ‘আলীম’ সর্বজ্ঞ; যিনি অন্তরের কল্পনাও জানেন।
তিনি ‘সামী’ সর্বশ্রোতা; যিনি পিঁপড়ার পদধ্বনিও শুনতে পান।
তিনি ‘বাসীর’ সর্বদ্রষ্টা। তিনি ‘খাবীর’ যিনি সবকিছুর খবর রাখেন।
তিনি ‘মুহীত’ সবকিছু তাঁর আয়ত্বাধীন, কোনো কিছু তাঁর পরিধির বাইরে নয়। আর এসবকিছুই বান্দাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আল্লাহ আমাকে সর্বদা দেখছেন।

সুতরাং স্মরণ রাখি, আল্লাহ আমাকে দেখছেন। হারাম বস্তুর দিকে তাকিয়ে সুখ অনুভব করছি? একটু ভাবি, যিনি আমাকে এই চোখ দান করেছেন, যিনি আমার কাছে এই চোখ আমানত হিসেবে দিয়েছেন, তিনি কি আমাকে দেখছেন না? নির্জনে কোনো বেগানা নারীর সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করছি, অথবা মিছে সুখের ফাঁদে ফোনে কাটিয়ে দিচ্ছি সারারাত। একটু স্মরণ করি, কেউ দেখছে না, আল্লাহ্ও কি দেখছেন না?

সুতরাং হে বন্ধু! কোনো পাপের পথে পা বাড়াবার আগে একটু ভাবি, আল্লাহ আমাকে দেখছেন।

মুমিন গুনাহ করতেই থাকে না; তওবা করে

মুমিন অনবরত বেপরোয়াভাবে গুনাহ করতেই থাকে না। বরং সে তার গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়, আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করে। আল্লাহ মুমিনের এ গুণের কথা কুরআনে বর্ণনা করেছেন এভাবে-

وَالَّذِينَ إِذا فَعَلُوا فاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ، أُولئِكَ جَزاؤُهُمْ مَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَجَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهارُ خالِدِينَ فِيها وَنِعْمَ أَجْرُ الْعامِلِينَ.

‘এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে- আর আল্লাহ ছাড়া আর কেইবা আছে, যে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা যা করে ফেলে, জেনে বুঝে তাতে অটল থাকে না এরাই সেই লোক, যাদের পুরস্কার হচ্ছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে মাগফিরাত এবং ঐ জান্নাত যার তলদেশে নহর প্রবাহিত, যাতে তারা স্থায়ী জীবন লাভ করবে। আর সৎকর্মশীলদের জন্য কতই না উত্তম প্রতিদান।’ -সূরা আলে ইমরান ৩: ১৩৫-১৩৬

আল্লাহ ক্ষমা করতেই ভালবাসেন

আল্লাহ বান্দাকে বিভিন্নভাবে সতর্ক করেছেন। আশা ও আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন। বান্দা গুনাহগার কিন্তু আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু। তাঁর দয়া অসীম, তাঁর ক্ষমা অতি ব্যাপক। সুতরাং হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

قُلْ يَا عِبادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعاً إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর সীমালংঘন করেছে, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করেন। তিনি তো অতি ক্ষমাশীল বড় মেহেরবান।’
-সূরা যুমার ৩৯: ৫৩

আল্লাহ ক্ষমা করতে ভালবাসেন। তিনি ক্ষমাশীল সুতরাং আমরা তাঁর ক্ষমারই আশা রাখব এবং গুনাহ থেকে বাঁচতে চেষ্টা করব ও ক্ষমা চাইতে থাকব। হাদীসে কুদসীতে ইরশাদ হয়েছে-

قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلَا أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ، وَلَا أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِي لَا تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لَأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً.

আল্লাহ তাআলা বলেন, হে বনী আদম! তুমি যত গুনাহই কর, যতক্ষণ আমাকে ডাকতে থাকবে এবং আমার কাছে (ক্ষমার) আশা রাখবে আমি তোমার পূর্বের সব (গুনাহ) মাফ করে দিব, কোনো পরোয়া করব না। হে বনী আদম! তোমার গুনাহ যদি (এত বেশি হয় যে তা) আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি ক্ষমা করে দিব, কোনো পরোয়া করব না। হে বনী আদম! যদি তুমি শিরিক থেকে বেঁচে থাক, আর পৃথিবী-ভরা গুনাহও নিয়ে আস তাহলে আমি ঐ পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব
-জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৪০

Leave a Comment

Your email address will not be published.